মহাপ্রান লালন ফকিরের তাঁর আবির্ভাব ও তাঁর দর্শন
DOI:
https://doi.org/10.5281/zenodo.17551026Keywords:
অধ্যাত্মবাদ, মানবতাবাদ, আত্মদর্শন, সমাজ সংস্কারক, ব্রিটিশ শাসিত ভারতAbstract
বিশ্ব দরবারে লালন ফকির একটি বিশেষ পরিচিত নাম। তিনি লালন শাহ নামেও পরিচিত ছিলেন। লালন ফকিরকে এককথায় প্রকাশ করা অসম্ভব । তাঁর অস্তিত্ব তৎকালীন সমাজে এবং তাঁর সেই অস্তিত্বের ছায়া বর্তমানে আমাদের সমাজের মধ্যে বিদ্যমান । তাঁর অসীম সাধনার জন্য তাঁকে সাধক আখ্যা দেওয়া হয়। তাঁর সৃষ্টিশীল চিন্তা ভাবনার পরিসর কেবলমাত্র সামাজিক স্তরেই সীমাবদ্ধ ছিল না, এর ব্যাপ্তি অনেকখানি । তিনি একাধারে অধ্যাত্মবাদী, ফকির সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক ছিলেন । অন্যদিকে, তাঁর গান এক অভূতপূর্ব শিল্প সৃষ্টি । তিনি নিজেই তাঁর সমস্ত গানের গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক ও ছিলেন । সম্ভবত ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি অবিভক্ত ব্রিটিশ শাসিত ভারতে জন্মগ্রহণ করেন । ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দ অবধি তাঁর অস্তিত্ব ছিল বলে জানা যায় । তিনি মানব ধর্মের সাধক । তাঁর গানের মধ্যে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ‘মানুষ’ অর্থাৎ মানব ধর্ম বিশেষ ভাবে গুরুত্ব পেয়েছে । তাঁর গানের মধ্যে বলা হয়েছে –
“মানুষ ছাড়া ক্ষ্যাপারে তুই মূল হারাবি,
মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হ’বি।” অর্থাৎ তিনি
‘সবার উপরে মানুষ সত্য’ আদর্শকে তুলে ধরেছেন।
সমাজকে তিনি জাত ধর্মের ভেদাভেদ থেকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। ব্রিটিশ সরকার যেভাবে ভারতবর্ষে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন তৈরী করেছিল তিনি তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন, শুধু তাই নয়, তিনি জমিদারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রজাদেরকে সমর্থন করেছিলেন। তাই তাঁর লোকোত্তর ধর্মের মাধ্যমে তিনি সমাজের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে আকৃষ্ট করেছেন। তাঁর দর্শন এবং গানের ধারা প্রচুর মানুষকে প্রভাবিত করেছিল। লালনের আত্মদর্শন এবং তাঁর অপরিসীম জ্ঞানের পরিধি আজ চারিদিকে ব্যাপ্ত। তৎকালীন যুগের ধর্মীয় আচার ব্যবস্থা, ধর্মীয় অনুশাসন, ব্রিটিশ শাসিত ভারতে সাধারণ মানুষের উপর নিপীড়ন, তাদের মধ্যে জাতি ধর্ম বর্ণের ভেদাভেদ, এ সমস্ত কিছুকে অতিক্রম করে তিনি বারবার এই সব নিয়ে প্রশ্ন করেছেন । তাঁর মানব ধর্মের মূল মন্ত্র হলো মানুষ । তাই তাঁর গানে -
“সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে।
লালন বলে জাতের কিরূপ দেখলাম না এ নজরে।”
Downloads
Published
How to Cite
Issue
Section
License
Copyright (c) 2025 International Journal of Science and Social Science Research

This work is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International License.
